ডেস্ক নিউজ : রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, ‘কারাগারে আগত বন্দিদের বড় অংশ মাদক মামলায় আটক। এ সকল মাদকসেবী, মাদক ব্যবসায়ীরা যাতে কারাগারে থেকে মাদক সেবন কিংবা মাদকের ব্যবসা পরিচালনা করতে না পারে সেজন্য আপনাদের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারা প্রশাসনের কেউ যাতে এসব অনৈতিক কাজে জড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারেও কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, একজন বন্দি যখন কারাগারে প্রবেশ করে তখন তার সব দায়দায়িত্ব কারা কর্তৃপক্ষের।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সময়ে আমাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। আমি ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, রাজশাহী ও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলাম। তাই কারাগারের জীবন সম্পর্কে আমার অভিজ্ঞতাও কম নয়।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
আব্দুল হামিদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের মুক্তির পূর্বে পুনঃসামাজিকীকরণ এবং মুক্তির পর নতুন জীবন শুরুর প্রস্তুতিমূলক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশ বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ অনুসরণে ‘উন্মুক্ত কারাগার’ নির্মাণের পরিকল্পনা একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এটি বাস্তবায়িত হলে বন্দিদের প্রাকমুক্তি পারিবারিক বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে এবং তারা আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠবে। যা পুনঃঅপরাধ রোধে সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কারাগারে কেবল অপরাধী নয়, রাজবন্দি হিসেবে অনেক নেতাকর্মীকে জেলে থাকতে হয়। আমাদের জাতির পিতাকেও রাজনৈতিক কারণে ১৪ বছরের অধিক সময় কারাগারে কাটাতে হয়। নেলসন ম্যান্ডেলা তার জীবনের ২৯ বছর নির্জন কারাগারে কাটাতে বাধ্য হন।’
আব্দুল হামিদ আরও বলেন, ‘জাতির দুর্ভাগ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার ধারাবাহিকতায় আমাদের জাতীয় চার নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়।’
এর আগে বেলুন উড়িয়ে কারা সপ্তাহ সূচনা করেন রাষ্ট্রপতি। এর পর কারারক্ষীদের প্রদর্শিত কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে কারাগারকে নিরাপদ রাখার কাজে সাফল্যজনক কর্মকাণ্ডের জন্য শ্রেষ্ঠ সাত কারা কর্মকর্তাকে ক্রেস্ট প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা ও সুরক্ষা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, কারামহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিনসহ কারা বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা